নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেটের বিশ্বনাথ পৌর এলাকার কালীগঞ্জ বাজারে ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও পৌরসভার ট্রেট লাইসেন্স’ ছাড়াই অবৈধভাবে চালিয়ে যাওয়া পরিবেশ দূষণকারী ‘আল-ফালাহ’ ইটভাটা অপসারণের দাবিতে নাগরিক সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে পৌর এলাকার কালীগঞ্জ বাজারে বাসিয়া সেতুর উপর ‘বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট জেলা শাখা ও কালীগঞ্জ বাজার সচেতন নাগরিক ফোরাম’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহন করেন।
কালীগঞ্জ বাজার সচেতন নাগরিক ফোরামের আহবায়ক ফজল খানের সভাপতিত্বে ও সংগঠক রাজা মিয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত নাগরিক সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম। বক্তব্য কালীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রব, কালীগঞ্জ বাজার সচেতন নাগরিক ফোরামের যুগ্ম আহবায়ক একে সাজু। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সদস্য সচিব আনোয়ার মিয়া।
নাগরিক সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালের ইটভাটা আইন অনুযায়ী পৌর এলাকার ১ কিলোমিটারের মধ্যে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি ইটভাটা করা যাবে না। অথচ আইনের তুয়াক্কা না করেই বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজুল হক ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও পৌরসভার ট্রেট লাইসেন্স ছাড়াই অবৈধভাবে বিশ্বনাথ পৌর এলাকার ভেতরে কালীগঞ্জ বাজারে রাস্তার পার্শ্বে আল-ফালাহ নামে ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন অবলীলায়। এতে তিনি (সিরাজুল) একজন মানুষ গড়ার কারিগর হওয়ার পরিবর্তে এলাকাবাসীর কাছে মানুষ মারার কারিগরে পরিণত হয়েছেন। আল-ফালাহ ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কার্যক্রম শুরু হলে এর আশ-পাশে থাকা ৫/৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাথীরা, বাজারের ব্যবসায়ী-ক্রেতা, মসজিদ-মন্দিরের পূর্ণ্যাতিরা আক্রান্ত হন নানান রোগে। তাছাড়া ইট পোড়ানোর জন্য আশপাশের কৃষি জমি থেকে উপরিভাগের মাটি ক্রয় করার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এলাকার কৃষি এবং সেই কৃষি জমির মাটি বহনের সময় সড়কে পড়ার ফলে একটি বৃষ্টিতেই ঘটে একাধিক দূর্ঘটনা।
বক্তারা আরো বলেন, আল-ফালাহ ইটভাটাটি ঘনজনবসতি এলাকাতে হওয়ার ফলে এ এলাকায় নারিকেল-সুপারি-আম-জাম-কাঠালসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফসনের উৎপাদন কমে যাচ্ছেন, ৩ ফসলী কৃষি জমি, পুকুর, রাস্তাঘাট চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইটভাটার কালো ধোয়ায় স্কুলের কোমলমতি শিশু ও বয়স্করা শ্বাসকষ্ট, হাঁপানী, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই ইট ভাটার মালিক সরকারি কোন নিয়ম-নীতি না মেনে নিজের ইচ্ছামতো ইটভাটার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া ও পৌরসভার অনুমতিপত্র ছাড়া এলাকার মানুষের ক্ষতি করে কিভাবে এই ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন বক্তারা। অথচ ইতিমধ্যে এই ইটভাটা অপসারণের দাবিতে জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর মেয়র বরাবরে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। তারপরও টনক নরছে না সরকারের সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের।
আপনার মতামত লিখুন :